বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রূপগঞ্জে স্বাস্থ্য সহকারীদের ৬ দফা দাবিতে কর্ম বিরতি বাবুলের উদ্যোগে ১২ নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় ফগার মেশিনে ঔষধ ছিটানো অব্যাহত রূপগঞ্জে ভুয়া অনলাইন অ্যাপস VBSZ দেখিয়ে ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রূপগঞ্জের হোড়গাঁওয়ে মাদক কারবারি ও ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে গ্রামবাসীর মানববন্ধন তেঁতুলিয়ায় খেলার মাঠে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ্যতার জন্য দোয়া নারায়ণগঞ্জে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া ও মিলাদ মাহফিল খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনায় রূপগঞ্জ বিএনপির আয়োজনে লাখো মানুষের দোয়া রূপগঞ্জে ইটভাটায় গ্যাস সিলেন্ডার বিস্ফোরণে অগ্নিকান্ড ২০ ঘর পুড়ে ছাঁই খালেদা জিয়ার অবস্থার উন্নতি রূপগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আলোচনা সভা

ফরিদপুর খাটরায় সস্তা উন্নয়নের নামে দুর্নীতি  

গ্রামীন কণ্ঠ ডেস্ক / ৩৩৫ বার পঠিত
প্রকাশিত সময় : বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:৩৩ পূর্বাহ্ন

ভাঙ্গা, ফরিদপুর প্রতিনিধি: ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার কাউলিবেড়া ইউনিয়নের খাটরা গ্রামে এলজিআরডি প্রকল্পের কাজ নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ সূত্রে, প্রয়োজনহীন কালভার্ট নির্মাণ, নিন্মমানের রাস্তার কাজ এবং প্রকল্পের অর্থ অপচয়ের মাধ্যমে গ্রামটি যেন রীতিমতো একটি ‘সস্তা উন্নয়ন’এর কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছে।

অনুসন্ধানে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য: প্রাথমিক অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দরপত্রের শর্ত ও নির্মাণ কোড অনুযায়ী গ্রামের ভিতরের রাস্তার কাজ অনেক নিম্নমানের। একাধিক স্থানে কোন রকম সাইট ভিজিট ছাড়াই কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। সরকারি অর্থ ব্যয়ের কোনো স্বচ্ছতা না থাকায় খাটরা গ্রামের অলিগলি যেন অনিয়মের এক বিশাল চিত্রপট। অপ্রয়োজনীয়ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে কালভার্ট, যার কোন দরকার ছিল না। সরজমিনে দেখা যায়, চলমান নির্মাণকাজও মানসম্পন্ন নয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এলজিআরডিতে কর্মরত সফিউর রহমান বাচ্চু মুন্সি, খাটরা গ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত। অভিযোগ রয়েছে, তার প্রভাবেই গ্রামের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয় এবং সেগুলোর বেশিরভাগই মানহীন ও অনিয়মপূর্ণ।

স্থানীয়রা বলেন, তিনি প্রকল্প কখন আনেন, কাকে দেন, তা ঠিক করে, তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন। এটি যেন এক প্রকার ব্যক্তিগত সাম্রাজ্যের মতো।

ভুক্তভোগী ফয়সাল রাজু জানান, বাচ্চু ও তার সহযোগীরা এলজিআরডি প্রকল্পের নামে অর্থ ব্যবহার করে আমাদের ওয়ারিশসূত্রে প্রাপ্ত ৮.৮ শতক জমিতে মাটি ভরাট করে সেখানে প্রাচীর নির্মাণ করেছে। তিনি দাবি করেন, এই জমির বিএস খতিয়ান অনুযায়ী মালিকানা আমাদের। খাজনাও পরিশোধ করা হয়েছে। তারপরও কোনো নোটিশ বা আলোচনা ছাড়াই এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি প্রশ্ন তোলেন এলজিআরডি চীফ ইঞ্জিনিয়ার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে—কিভাবে সরকারি অর্থ ব্যবহার করে অন্যের জমিতে মাটি ভরাট করা হলো? দরপত্র প্রক্রিয়া কিভাবে হলো, ঠিকাদার কে, এসব প্রশ্নের জবাব এখনও অধরা।

মসজিদ কমিটির সভাপতি পরিচয়ধারী আহমদ মিয়া-র বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি এই পরিস্থিতি সম্পর্কে জানার পরও কোনো পদক্ষেপ নেননি। অভিযোগ অনুযায়ী, তিনি বলছেন যে, গ্রামের কোর কমিটির প্রধান এলজিআরডি সফিউর রহমান বাচ্চুর নির্দেশ ছাড়া তিনি কিছু করতে পারবেন না।এলজিআরডি  কর্মকর্তা সফিউর বাচ্চু মসজিদের সভাপতি আহমদকে দিয়ে যদি জমি জবর দখল করে রাখার নির্দেশ দিয়ে থাকেন। তাহলে এটা গুরুতর অভিযোগ। আভিযোগ সত্য হলে স্পষ্টত বোঝা যাবে এখানে সংঘবদ্ধ একটা চক্র সক্রিয় আছে যারা আহমদ মিয়াদের দিয়ে সমাজে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি করতে চায়। আর অভিযোগ মিথ্যা হলে ভূক্তভূগির জমি অনতিবিলম্বে তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে ।

আরও অভিযোগ রয়েছে, বাচ্চুর কোর কমিটিতে আমেরিকা প্রবাসী সেলিম মুন্সি ও স্থানীয় ব্যবসায়ী সহ আরও কয়েকজন স্থানীয়র নামও অন্যের জমিতে মাটি ভরাট ও প্রাচীর নির্মাণ প্রকল্প সংক্রান্ত অনিয়মে জড়িত রয়েছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, চৌধুরীর নাতির ন্যায্য হকের জমি, বিএস কাগজও তার। জমিতে কিছু করতে চাইলে তার অনুমতি নেওয়া উচিত ছিল। আর সরকারি টাকায় কেউ দানবীর হতে পারে না। যদি কেউ সমাজের জন্য কিছু করতে চান, তাহলে সেটা নিজের অর্থে হওয়া উচিত।

পরিশেষে বলা যায়: খাটরা গ্রামের চলমান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে যেভাবে এলজিআরডি প্রকল্পের অর্থ ব্যবহারে অনিয়ম, স্বজনপ্রীতি ও ব্যক্তিগত প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে, তা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। সরকারি অর্থ যদি ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহৃত হয় এবং প্রকল্প বাস্তবায়নে যদি নিরপেক্ষতা ও স্বচ্ছতা না থাকে—তাহলে উন্নয়ন কার্যক্রম সমাজে বিভাজন, অসন্তোষ ও দীর্ঘস্থায়ী বিরোধ সৃষ্টি করতে পারে।

স্থানীয় প্রশাসন ও এলজিআরডি বিভাগ যদি এই বিষয়ে দ্রুত তদন্ত ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ভবিষ্যতে এমন অনিয়ম আরও উৎসাহ পাবে, এবং সরকারের উন্নয়ন উদ্যোগ জনআস্থা হারাবে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রকল্পটির সকল নথিপত্র, দরপত্র প্রক্রিয়া, বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার এবং জমির মালিকানা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য স্বচ্ছভাবে যাচাই করে প্রাসঙ্গিক দপ্তরগুলোর উচিত সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া। উন্নয়ন যেন হয় জনস্বার্থে, আইনের শাসন মেনে।

আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...


এ ক্যাটাগরীর আরো খবর..