কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন। প্রাক্তন শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্যোগে এই মিলনমেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সকাল ৮ টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং আনন্দ র্যালির মাধ্যমে শতবর্ষ উদযাপন শুরু হয়। পরে বেলা ১২ টা পর্যন্ত প্রতিষ্ঠাকালীন থেকে ২০২৪ সালের শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণ এবং কৃতী ছাত্র ছাত্রীদের সংবর্ধনাসহ ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক সাবেক সচিব ড. একেএম জাহাঙ্গীর’র সভাপতিত্বে এবং মাইন উদ্দিন সোহাগ, ইকবাল মাহমুদ ও আবুল কালাম’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, গৃহায়ণ গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নজরুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সংসদ সচিবালয়ের সচিব (পিআরএল) মো. আনোয়ার উল্লাহ এফসিএমএ, অতিরিক্ত সচিব ব্যারিস্টার গোলাম সরওয়ার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ডা. মো. জিয়া উদ্দিন, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার, কুমিল্লা পুলিশ সুপার মো. নাজির আহমেদ খাঁন।
উদযাপন অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করেন সুধির চন্দ্র মল্ল বর্মণ, মকবুল আহমেদ, অ্যাডভোকেট আবুল বাশার।
অনুষ্ঠানে স্কুলের ইতিহাস তুলে ধরেন, সাবেক প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, শতবর্ষ উদযাপন কমিটির অর্থ বিষয়ক আহবায়ক মো. সলিম উল্লাহ।
প্রধান অতিথি বলেন, জুলাই আগস্ট গণঅভ্যুত্থান নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করার স্বপ্ন দেখিয়েছে। উন্নত বিশ্বের মাঝে দুর্নীতির কারণে আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। পোমগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ১০০ বছর পূর্বে যারা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আমি শ্রদ্ধার সাথে তাদের স্মরণ করি, তারা এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন বলেই আজকে এই বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষ তৈরি হয়েছেন। দেশকে দুর্নীতিমুক্ত একটি সুন্দর বাংলাদেশ হিসেবে গড়তে সবাইকে শপথ নিতে হবে। শতবর্ষ আগে যারা এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন তারা আজকে হয়তো এখানে কেউ নেই, দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন, তাদের এবং তাদের পরিবারের জন্য মহান আল্লাহর কাছে তাদের উত্তম পুরস্কারের জন্য প্রার্থনা করি।
বিশেষ অতিথি ড. আনোয়ার উল্লাহ এফসিএমএ বলেন, আমরা এই যে শতবর্ষ পূর্তি উদযাপন করছি এর পিছনে কিন্তু একটি উদ্দেশ্য আছে। আমি সভাপতি মহোদয় এবং বিভিন্ন বিজ্ঞজনের সাথে কথা বলেছি একটি ফাউন্ডেশন করার জন্য, যার মাধ্যমে শিক্ষা এবং এলাকার অনেক উন্নয়ন করা সম্ভব। আপনারা সবাই দোয়া করবেন আমরা যেন ভবিষ্যতে সমিতি করে আমরা উন্নয়নের কাজ করব, এই ফাউন্ডেশন যত তাড়াতাড়ি আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারবো ততই সবার জন্য মঙ্গল হবে।
বিশেষ অতিথি বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আমাকে এখানে আপনারা বিশেষ অতিথি হিসেবে সম্মান দান করছেন আশা করছি এটি প্রত্যান্ত এলাকা হলেও এই স্কুল যে সম্মানের সৃষ্টি করেছে তা শতশত বছর অম্লান থাকবে। আপনারা একটি এলোমনাই এসোসিয়েশন তৈরি করে যারা বেকার রয়েছে পশ্চাদপদ রয়েছে তাদেরকে আমরা সহযোগিতা করতে পারি, আমাদের কারো রক্তের দরকার হলেও তাৎক্ষণিকভাবে আমরা যোগাযোগের ব্যবস্থা করতে পারি। আমি আশা করব আপনাদের এই বিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে একটা এলোমনাই এসোসিয়েশন গড়ে উঠবে এবং আপনাদের বন্ডেজকে অনেক শক্তিশালী করবে।
জেলা প্রশাসক বলেন, আজকের এই চমৎকার অনুষ্ঠানটি যারা আয়োজন করেছেন আমি এখানে আসার আগেও বুঝতে পারেনি যে, এত ব্যাপক পরিসরে এত বিশাল পরিসরে চমৎকার একটি অনুষ্ঠান আয়োজিত হতে যাচ্ছে। এই স্কুল থেকে পড়াশুনা করে শিক্ষাজীবন শেষ করে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে এই স্কুলে শিক্ষার্থীরা। আমি আশা করি সামনের দিনগুলোতে এই স্কুলের যারা সম্মানিত শিক্ষক এবং অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে এই স্কুলের মহিমা রয়েছে সেটি দেশে এবং দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আমাদের বিশ্ব পরিমণ্ডলে স্কুলটির গৌরবের ইতিহাস ছড়িয়ে দিবে।
এছাড়া অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন, মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাহরিয়া ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন, মমনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বিপুল চন্দ্র দে, বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মোবারক উল্লাহ মজুমদার, বিশিষ্ট সমাজসেবক মাসুদুল আলম বাচ্চু, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...