রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের পাশাপাশি চাহিদা থাকে বিভিন্ন জাতের ফলের। দিনশেষে ইফতারিতে ফল না থাকলে যেন অতৃপ্তি থেকে যায়। সেই ইফতারের আয়োজনে নানারকম ফলও স্থান পায়। তবে এবার রমজানে ফলের দাম বেশী থাকায় রোজাদারেরা ফল কিনতে হিমসিম খাচ্ছে।
রবিবার ২ মার্চ পাইকগাছা ফল বাজার ঘুরে এবং সংশ্লিষ্ট ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে ফল বাজারের এমন চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি ডালিম ৩৮০ -৪০০ টাকা, আঙ্গুর ৩০০-৩২০ টাকা, কালো আঙ্গুর ৪৩০-৪৫০ টাকা, মাল্টা ২৮০-৩০০ টাকা, বেল মানভেদে ৮০-১০০ টাকা পিছ, পেয়ারা ৬০-৭০ টাকা, প্রতি কেজি কলা ৬০-৭০ টাকা, মাঝারি সাইজের তরমুজ কেজি ৬০-৭০টাকা, প্রতি কেজি আপেল মানভেদে ২৮০-৩০০ টাকা, নাশপাতি ৩২০ টাকা, সফেদা ১৮০ টাকা, আনারস প্রতি পিছ ৫০ টাকা, কমলা ২৮০ টাকা, চায়না কমলা ৩৩০ টাকা কেজি, দাবাস খেজুর ৪৩০-৪৫০, ডেট ক্রাউন খেজুর ৪৮০ টাকা, জিহাদী খেজুর ২৩০ টাকা, লোকাল বস্তা খেজুর ১৬০-১৮০ টাকা, লেবু পিছ ১৫ টাকা, রমজান উপলক্ষে ফল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে প্রতি কেজি বিভিন্ন ফলে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেড়েছে।
মহানবী (সা.) বলেছেন, পণ্যদ্রব্য আটক করে অধিক মূল্যে বিক্রয়কারী অবশ্যই পাপী (সহী মুসলিম শরীফ)। অন্য হাদিসে এসেছে, ‘আমদানিকারক রিজিকপ্রাপ্ত হয়, আর মজুতদার হয় অভিশপ্ত। ইসলাম পণ্যদ্রব্যকে তার যথাযথ ভোক্তার কাছে হস্তান্তরে বদ্ধপরিকর। সেক্ষেত্রে যাতে কোনো ধরনের শোষণের অবকাশ না থাকে- সেদিকে দৃষ্টি রেখেছে ইসলাম। কারণ, যদি এমনটি হয়, তাহলে ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ের যে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হবার সম্ভাবনা থাকে। তাছাড়া এগুলো প্রতারণারও অন্তর্ভুক্ত।
ক্রেতা, মোঃ রজব আলী বলেন, বৃদ্ধ মা রোজা রাখেন। মা প্রতিদিন একটু ফল খান ইফতারে। বাচ্চারাও ফল পছন্দ করে। কিন্তু ফলের যে দাম তাতে আর কিনে খাবার উপায় নেই। আনার, নাশপাতি, আঙুর যা কিছুই কিনতে যাই অনেক দাম। যে টাকা রোজগার করি তা দিয়ে পরিবারকে ফল কিনে খাওয়ানোর মতো সম্ভব না।
ফল বিক্রেতা মো. মিলন বলেন, সবকিছু আসলে আড়ৎদারদের হাতে। তারাই দাম কমান আবার বাড়ান। এখানে আমাদের হাত নেই। আমরা ছোট ব্যবসায়ী, আমরা প্রতি কেজিতে ২০/৩০ লাভ করি।
সাবেক কাউন্সিলর মো. আব্দুস সালাম বলেন , কিছুদিন আগে বাজারের নিত্যপূর্ণ জিনিসের দাম যা ছিল তার থেকে ৪০-৫০ টাকা কেজি প্রতি বেশী, পবিত্র মাহে রমজানে তিনি অসাধু ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করেছেন এবং প্রশাসনের পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
বিশ্বের মুসলিম দেশগুলোতে রমজান আসলেই ব্যবসায়ীরা ১১ মাস যে দামে পণ্য বিক্রি করে তার থেকে মাহে রমজানে সবকিছুর দাম কিছুটা স্বাভাবিক ও কম দামে বিক্রয় করে। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা তারা ভিন্ন রূপ দেখায়। রমজান আসলেই নিত্যপণ্যের পাশাপাশি ফল ব্যবসায়ীরাও ফলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেয়। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের জন্য ফল ক্রয় করাটা হয়ে যায় কষ্টসাধ্য।
আপনার মন্তব্য প্রদান করুন...